কুলাউড়ায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতার পিতার বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা আত্নসাতের অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ৩:৩৬:০০,অপরাহ্ন ০১ অক্টোবর ২০১৯ | সংবাদটি ১৯০ বার পঠিত
বিশেষ প্রতিনিধি :
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সাঈদ খান শাওনের পিতা মুহিম খানের বিরুদ্ধে প্রতারনা করে ২০ লাখ টাকা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেন রউফ আহমদ শিবলু নামের এক ব্যবসায়ী।
৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকেলে কুলাউড়া পৌরসভার হলরুমে আয়োজতি সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রউফ আহমদ শিবলু বলেন, মৌলভীবাজার জেলা নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন কুলাউড়া উপজেলা শাখার কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দীর্ঘদিন থেকে ঠিকাদারী ব্যবসার সাথে তিনি জড়িত।
তাঁর প্রতিবেশী কুলাউড়া উপজেলার চাতলগাও গ্রামের বাসিন্দা মৃত মনোহর খানের ছেলে মোঃ মুহিম খান ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগে পার্টনারশিপে একটি ইটভাটার কাজ শুরু করার সময় ইট দেয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে নগদ ২২ লাখ টাকা ও তার বন্ধুদের কাছ থেকে আরো ৬ লাখ টাকা অগ্রীম নেন।
ইটের মেমো তৈরী না হওয়ায় তিনি ষ্টাম্পে এফিডেবিট করে একটি চুক্তিনামা করেন। মেমো তৈরী হলে পরবর্তীতে তাকে মেমো দেয়ার কথা থাকলেও তিনি মেমো কিংবা কোন ইট দিতে পারেননি। এতে করে মুহিম খানের সাথে তার বিবাদের সৃষ্টি হয়।
মুহিম খান দক্ষিণভাগ থেকে ইটের ব্যবসা গুটিয়ে চলে আসলে টাকা নিয়ে শিবলু ও তার বন্ধুদের ঝগড়া শুরু হলে সাড়ে ৫ লাখ টাকা মুহিম খান ফেরত দেন। পরবর্তীতে বাকি টাকা প্রদান না করায় দফায় দফায় শালিসি বৈঠক হয়।
বৈঠক গুলোতে কুলাউড়ার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে শিবলুর ২০ লাখ ৩০ হাজার টাকা ফেরত দেয়ার আশ্বাস দিলেও মুহিম খান কোন টাকা দেননি। গত রমজানে কুলাউড়া শহরে পাওনা টাকা নিয়ে দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হলে ঈদের পরে টাকা দিবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন মুহিম খান।
ঈদের পরদিন মুহিম খানের ছেলে সাঈদ খান শাওন (কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক) শিবলুকে টাকা না দেয়ার হুমকি দিয়ে বলেন, আমার বাবার সাথে টাকা নিয়ে পরবর্তীতে বাড়াবাড়ি করলে ৬৪ জেলায় মামলা দিয়ে দেশ ছাড়া করবেন। শুধু তাই নয় পুলিশ, ছাত্রলীগ দিয়ে পিটিয়ে গুম করারও হুমকি প্রদান করেন।
ওই দিন রাতেই শিবলুর হার্ট অ্যাটাক হলে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে শিবলুর কিছুটা উন্নতি হলে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।বর্তমানে শিবলু সব কিছু হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
রউফ আহমদ শিবলু নিরুপায় হয়ে উত্তর চাতল গাও জামে মসজিদের পঞ্চায়েতের কাছে বিচার প্রার্থী হলে গত ৩০ আগষ্ট শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর পঞ্চায়েত প্রধান মোঃ ইসহাক আলীর বাড়ীতে এ নিয়ে পুনরায় বিচার অনুষ্টিত হয়।
উক্ত বিচারে মুহিম খান ও তাঁর দুই ছেলে নয়ন ও শোভন উপস্থিত থাকাকালীন মুহিম খানের স্বীকারোক্তি মতো বিচারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, শিবলুর পাওনা ২০ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা অথবা উক্ত টাকার সমপরিমান ২০ শতক জমি শিবলুকে প্রদান করার জন্য। মুহিম খান পঞ্চায়েতের কাছে একদিনের সময় দাবী নিয়ে চলে আসেন।
পরবর্তীতে তিনি পঞ্চায়েতের ডাকে সাড়া না দেয়ায় গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ তাহির মিয়ার বাড়িতে মসজিদের মোতাওয়াল্লী মোঃ ইসহাক আলীর সভাপতিত্বে পঞ্চায়েতের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পঞ্চায়েতের রায় না মানার কারণে উক্ত সভায় উপস্থিত সকলের মতামতের ভিত্তিতে মোঃ মুহিম খানকে পঞ্চায়েতের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
মুহিম খান গংদের মিথ্যা মামলা হামলার হুমকি প্রদান ও পাওনা টাকা আদায় করতে এবং জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনসহ সমাজের সকল স্থরের বিবেকবান মানুষের সহযোগিতা কামনা করে শিবলু সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করেন।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে পঞ্চায়েত প্রধান মোঃ ইসহাক আলী, প্রবীন মুরব্বি মোঃ আরজ খান. হাবিব খান, সাবেক ইউপি সদস্য আবু তাহের, পঞ্চায়েত সদস্য মোঃ খালিক মিয়া, লেবু মিয়া, মোবারক আলীসহ উপস্থিত ছিলেন।